মুকুন্দরাম চক্রবর্তীকে দুঃখবাদী কবি বলা হয় কেন?
বাংলা সাহিত্যে মধ্যযুগের সময়কাল ১২০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তবে মধ্যযুগের প্রথম পর্যায়ে অর্থাৎ ১২০১ থেকে ১৩৫০ খ্রিস্টাব্দ বাংলা সাহিত্যে তেমন কোনো সাহিত্য নিদর্শন পাওয়া না যাওয়ায় এই সময়কালকে বাংলা সাহিত্যে অন্ধকার যুগ বলে। আর মধ্যযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী।
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী তার চন্ডীমঙ্গল ধারার কাব্য 'অভয়ামঙ্গল' কাব্যের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে ব্যাপক প্রসংসা অর্জন করেন এবং সেই সাথে জনপ্রিয়তাও বাড়ে। তার অভয়ামঙ্গল কব্যের একটি উপাখ্যানের নাম 'কালকেতুর উপাখ্যান'। এই উপাখ্যানে তিনি ফুল্লরার বারমাসী বর্ণনার মাধ্যমে তার শিল্প দক্ষতার পরিচয় দেন। তার কাব্যে তিনি দুঃখ, কষ্ট, বেদনার চিত্র স্পষ্টভাবে ফুঁটিয়ে তুলেন।
এবং কাব্যে চরিত্রগুলোর দুঃখ উত্তরণের তেমন প্রচেষ্টা দেখা যায় না।
এ সম্পর্কে ড. দীনেশ চন্দ্র সেন বলেছেন, 'কবি কঙ্কণ সুখের কথায় বড় নহেন, দুঃখের কথায় বড়।'
কবি কঙ্কণ মুকুন্দরাম চক্রবর্তী কালকেতুর উপাখ্যানে দুঃখের বর্ণনা করুণভাবে উপস্থাপন করলেও তার চিন্তাভাবনায় তিনি দুঃখবাদী ছিলেন না। বরং তিনি ছিলেন ভোগবাদী ও জীবনবাদী কবি।