' সোনার তরী ' কবিতার মূলভাব ( সোনার তরী কাব্যগ্রন্থ )



 ' সোনার তরী ' কবিতার মূলভাব ( সোনার তরী কাব্যগ্রন্থ )


বাংলা সাহিত্যের আকাশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি তার সৃষ্টিকর্ম দ্বারা অমর হয়ে আছেন অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে।


' সোনার তরী ' তারই রচিত একটি কাব্যগ্রন্থ এবং কাব্যগ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৯৪ সালে।


' সোনার তরী ' কবিতাটি এই কাব্যগ্রন্থরই অন্তর্ভুক্ত একটি কবিতা।


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সোনার তরী কাব্যগ্রন্থটি রচনা করার সময় ঘুরে বেড়িয়েছেন পূর্ব বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে।


ফলে গ্রামাঞ্চলের নর-নারীর সুখ - দুঃখ, আশা - নিরাশা ও মান - অভিমানের সাথে তার নিবিড় পরিচয় মেলে এবং মনে প্রাণে তা অনুভব করবার সুযোগ পায়।


কবিতাটির অন্তরালে কবি মানুষের সারাজীবন একটি চিত্র তৈরি করেছেন।


নদীর স্রোত যেমন প্রবাহমান ঘড়ীর কাটাও তেমন বেগবান।  কোনোটাকেই আটকে রাখা সম্ভব নয়। 


মানুষের জীবনও সেই নদীর স্রোত এবং ঘড়ীর কাটার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলে। তাকে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না।


মানুষ তার সারাটাজীবন পরিশ্রম করে কাটিয়ে দেয়। অথচ যখন তার সবকিছু হয়ে যায় তখন দেখে যে তার চলে যাবার সময় ঘনিয়ে এসেছে।


কবি এখানে বলেছেন,

"এতকাল নদীকূলে 

যাহা লয়ে ছিনু ভুলে 

 সকলি দিলাম তুলে 

 থরে বিথরে

 এখন আমারে লহ করুণা করে। "

সারাজীবনের যত সঞ্চয়, যা নিয়ে এতদিন ভুলে ছিল তার সবটুকুই সোনার তরী নামক নৌকায় তুলে দিয়ে যখন বলল যে তাকেও করুণা করে সেই নৌকায় তুলে নিতে। তখন মাঝি বলেন,


"ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই ছোটো সে তরী, 

 আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।"

সোনার ধানরুপে জীবনের সমস্ত কর্মকে তুলে নিলেও অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি মানুষকে তুলে নিলেন না।


পরিশেষে বলা যায়, মানুষ চায় তার কর্ম, ধ্যান-ধারণার ফল, জ্ঞান-বিজ্ঞানের উপকার যেমন জগৎ ভোগ করছে সেই সঙ্গে যেন তার ব্যাক্তি জীবনকেও মানুষ স্মরণ করে। কিন্তু এই জগৎ সেই ব্যাক্তিকে চায় না, শুধু চায় তার কর্মকেই।


আরোও পড়ুন : কবিতা ' সোনার তরী '

Post a Comment

1 Comments