বারমাসী বা বারমাস্যা কি / বারমাসী বা বারমাস্যা কাকে বলে? কালকেতুর উপাখ্যানে ফুল্লুরার বারমাস্যা
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে 'বারমাসী' গীতগুলো অপূর্ব সৃষ্টি। এধরণের বারমাসী বর্ণনার উল্লেখ পাওয়া যায় মঙ্গলকাব্য ও মৈমনসিংহ গীতিকাগুলোতে। বারমাসী হচ্ছে নায়িকার বারমাসের দুঃখ, দুর্দশা ও বিরহের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ। লেখক তার লেখনশৈলী দিয়ে খুব নিখুঁত ভাবে নায়িকার বারমাসের বিরহের বিবরণ চিত্রায়িত করেন।
মাসের শুরু অর্থাৎ বৈশাখ মাস থেকেই যে বিবরণ শুরু করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কাহিনীর সূত্রপাত যে মাস থেকে হয়, সে মাস থেকেই কবি বর্ণনা শুরু করেন।
বোঝার সুবিধার্থে উদাহরণ স্বরুপ নিচে একটি ' বারমাসী ' তুলে ধরা হলো :
কালকেতুর উপাখ্যানে ফুল্লুরার বারমাস্যা তুলে ধরা হলো :
জৈষ্ঠ - পাপিষ্ঠ জৈষ্ঠ মাসে প্রচন্ড তপন।
খরতর পোড়ে অঙ্গ রবির কিরণ।
আষাঢ় - আষাঢ়ে পূরিল মহী নব মেঘে জল।
ছাগল চরাতে প্রভু নাহি পাই স্থল।
শ্রাবণ - শ্রাবণে বরিসে মেঘ দিবস ও রজনী।
সিতাসিত দুই পক্ষ একাই ন জানি।
ভাদ্র - ভাদ্রপদ মাসে বড় দুরন্ত বাদল।
নদনদী একাকার আটদিকে জল।
আশ্বিন - উত্তম বসনে কেশ কর যে বণিতা।
অভাগী ফুল্লুরা কর যে উদরের চিন্তা।
কার্তিক - কার্তিক মাসেতে হৈল হিমের প্রকাশ,
কর যে সকল লোক শীত নিবারণ।
নিয়োজন তকৈল বিধি সবার কাপড়,
অভাগী ফুল্লুরা পরে হরিণের ছড়।
এভাবেই অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন, চৈত্র প্রত্যেকটি মাসের পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা করতে হয় বর্ণনা করতে হয় বারমাসীতে।
আরও পড়ুন: প্রমিত বাংলা বানান কি / প্রমিত বাংলা বানান কাকে বলে? প্রমিত বাংলা বানানের ১০ টি নিয়ম লেখ ( উদাহরণ সহ )