কুলি-মজুর – কাজী নজরুল ইসলাম - কবি ও কবিতা - সাহিত্য মহল

না খানের বিরুদ্ধে ,পনাময় কবিতা নিয়ে বাংলার যিনি কবি হিসেবে আসন পেয়েছেন, তিনি কবি চলবেলায় লেটোর বলে ম হয়েছেন, সেনাবাহিনীর হাবিলদার জয়ে যুদ্ধে যোগ নিয়েছেন, ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে গ্রোহের অপরাধে কারাবরণ করেছেন। তিনি পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন কবিতা, গল্প, উপহাস, ইস প্রকৃতি ত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন তিনি দেখেছেন তানা যোসের জন্য তাঁর 'সা' 'পিসে', 'ঘুম জানো পারি' সুম পানি সিপিবি' এবং 'শুরুদের দিয়ে। নজরুলের কবিতা ও গান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ প্রজা হিসেবে কাজ করেছে। তাঁর রচিত সন্ধ্যা" গ্রন্থের কদের জন্য জেলার কাজে লাগবে কাজী নজরুল ইসলাম। অশেষ ও নাতনের বিরুদ্ধে বিদ্রের, বিসয়ে বাংলার বহু বিভিন্ন ও জীবন বেলায় সেে হয়েছেন, সেনাবাহিনীর হাবিলদার করে যুদ্ধে যোগ নিয়েছেন বারের হোহের অপরাদে বরণ করেছেন। তিনি প্রকৃতি তখযোগ্য অবদান। তিনি যে শুধু বড়দের জন্য ছেন তাতে কা ', 'জানো পাখি' 'মা এবং নতুদের নিয়ে নজরুলের কবিতা ও গান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রোহিসেবে কাজ।



কুলি মজুর বাংলা কবিতা লেখক কাজী নজরুল ইসলামঃ


বাবু সাব এসে চড়িল তাহাতে, কুলিরা পড়িল তলে। বেতন দিয়াছ? চুপ রও যত মিথ্যাবাদীর দল! 

কত পাই দিয়ে কুলিদের তুই কত ক্রোর পেলি বল! রাজপথে তব চলিছে মোটর, সাগরে জাহাজ চলে, রেলপথে চলে বাষ্প-শকট, দেশ ছেয়ে গেল কলে, 

বল তো এসব কাহাদের দান। তোমার অট্টালিকা 

কার খুলে রাঙা? - তুলি খুলে দেখ, প্রতি ইটে আছে লিখা তুমি জান নাকো, কিন্তু পথের প্রতি ধূলিকণা জানে 

ঐ পদ্ম, ঐ জাহাজ, শকট, অট্টালিকার মানে।

                                   আসিতেছে শুভদিন,

দিনে দিনে বাড়িয়া দেনা, শুধিতে হইবে ঋণ!

হাতুড়ি শাবল চালায়ে ভাঙিল যারা পাহাড়, পাহাড় 

পাহাড় কাট সে পথের দু-পাশে পড়িয়া যাদের হাড়, তোমাকে সেবিতে হইল যাহারা মজুর, মুটে ও কুলে, 

তোমারে বহিতে যারা পবিত্র সঙ্গে লাগাল ধূলি, 

তারাই মানুষ তারাই দেবত, গাহি ভাহাদেরি গান।




বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম

ভূমিকা : বিদ্রোহ ও তারুণ্যের কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বাংলাকাব্যে ধূমকেতুর মতোই তাঁর আবির্ভাব। পচনধরা প্রথাগত সমাজকে ভেঙেচুরে স্বাস্থ্যকর নতুন এক সমাজ নির্মাণ করাই তাঁর স্বপ্ন ছিল। তাই তিনি বিদ্রোহ করেছিলেন সকল অন্যায়, অসত্য, শোষণ-নির্যাতন আর দুঃখ-দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে। ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ এবং পরাধীনতার গ্লানি থেকে জাতিকে মুক্ত করতে তিনি কলম ধরেছিলেন। কবিতা লেখার অপরাধে তিনি কারারুদ্ধ হন। বন্দি করেও থামানো যায়নি তাঁর লেখা। দুঃখ, দারিদ্র্য এবং সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে তাঁর জীবন।



জন্ম ও শৈশব-কৈশোর : 

১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দে, ২৪শে মে ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে তাঁর জন্ম। পিতার নাম কাজী ফকির আহমদ এবং মাতার নাম জাহেদা খাতুন। শৈশবে, মাত্র আট বছর বয়সে তাঁর পিতা মারা যান। চরম আর্থিক অনটন আর দুঃখ-দারিদ্র্যের মধ্যেই তাঁর বাল্যকাল কাটে। গ্রামের মক্তবে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর তিনি কিছুদিন স্থানীয় মাজারে খাদেম, মসজিদে ইমামতি ও মোল্লাগিরি করেন।


Also Read: সৎ পাত্র ছড়া কবিতা - লেখক সুকুমার রায় | Satpatra Chora | সৎ পাত্র


নজরুলের জন্মের পূর্বে তাঁর একাধিক ভাইবোন অকালে মারা যায়। এজন্য ছোটবেলায় নজরুলকে তাঁর পিতামাতা 'দুখু মিয়া' বলে ডাকতেন। খুব অল্প বয়সে তাঁর কবিত্বশক্তির প্রকাশ পায়। তিনি মুখে মুখে ছন্দ মিলিয়ে পদ্য রচনা করতে পারতেন। গ্রামের লেটোর দলে যোগ দিয়ে নজরুল গান গেয়েছেন, অনেক পালাগান।


Also Read: নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | সাহিত্য মহল


নজরুল এক দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা ছিল ধর্মীয়। স্থানীয় এসজিদে সম্মানিত মুয়াযযিন হিসেবেও কাজ করেছিলেন। কৈশোরে বিভিন্ন থিয়েটারদলের সাথে কাজ করতে যেয়ে তিনি কবিতা, নাটক এবং সাহিত্য সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান লাভ করেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর তিনি সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এসময় তিনি কলকাতাতেই থাকতেন। এসময় তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে প্রভাক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। প্রকাশ করেন বিদ্রোহী এবং ভাঙার গানের মতো কবিতা; ধূমকেতুরমতো সাময়িকী। জেলে বন্দী হলে পর লিখেন রাজবন্দীর জবানবন্দী, এই সব সাহিত্যকর্মে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ছিল সুস্পষ্ট। ধার্মিক মুসলিম সমাজ এবং অবহেলিত ভারতীয় জনগণের সাথে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। তার সাহিত্যকর্মে প্রাধান্য পেয়েছে ভালোবাসা, মুক্তি এবং বিদ্রোহ। ধর্মীয় লিঙ্গভেদের বিরুদ্ধেও তিনি লিখেছেন। ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলা কাব্যে তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। এটি হল ইসলামী সঙ্গীত তথা গজল, এর পাশাপাশি তিনি অনেক উৎকৃষ্ট শ্যামা সংগীত ও হিন্দু ভক্তিগীতিও রচনা করেন। নজরুল প্রায় ৩০০০ গান রচনা এবং অধিকাংশে সুরারোপ করেছেন যেগুলো এখন নজরুল সঙ্গীত বা "নজরুল গীতি" নামে পরিচিত এবং বিশেষ জনপ্রিয়।


কুলি-মজুর

শনিবারের চিঠিতে ব্যঙ্গ করবার ক্ষমতার একটা অসামান্যতা অনুভব করেছি। বোঝা যায় যে এই ক্ষমতাটা আর্ট-এর পদবীতে গিয়ে পৌঁছেচে। আর্ট পদার্থের একটা গৌরব আছে--তার পরিপ্রেক্ষিত খাটো করলে তাকে খর্বতার দ্বারা পীড়ন করা হয়। ব্যঙ্গসাহিত্যের যথাথ রণক্ষেত্র সর্বজনীন মনুষ্যলোকে, কোনো একটা ছাতাওয়ালা-গলিতে নয়। পৃথিবীতে উন্মার্গযাত্রার বড়ো বড়ো ছাঁদ, type আছে, তার একটা না একটার মধ্যে প্রগতিরও গতি আছে, যে-ব্যঙ্গের বজ্র আকাশচারীর অস্ত্র তার লক্ষ্য এই রকম ছাঁদের 'পরে।...ব্যঙ্গরসকে চিরসাহিত্যের কোঠায় প্রতিষ্ঠিত করবার জন্যে আর্টের দাবি আছে। শনিবারের চিঠি'র অনেক লেখকের কলম সাহিত্যের কলম, অসাধারণ তীক্ষ্ণ, সাহিত্যের অস্ত্রশালায় তার স্থান, নব-নব হাস্যরূপের সৃষ্টিতে তার নৈপুণ্য প্রকাশ পাবে, ব্যক্তিবিশেষের মুখ বন্ধ করা তার কাজ নয়।


কাজী নজরুল ইসলাম

২৩শে পৌষ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়কে লিখিত এবং মাঘ ১৩৩৪ মনে শনিবারের চিঠিতে প্রকাশিত এক পত্রে রবীন্দ্রনাথের এই উক্তি বিশেষ প্রণিধানযোগ্য। শনিবারের চিঠির বাঙ্গে-বিদ্রূপে বারবার বিপর্যস্ত ও বিচলিত কবিগুরুর প্রশংসাবাণী।

Post a Comment

0 Comments