নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | সাহিত্য মহল

পাঠ-পরিচিতি: কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কড়ি ও কোমল কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। এই জগৎ সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। মানুষের হাসি-কান্না, মান-অভিমান, আবেগ-ভালোবাসায় পৃথিব পরিপূর্ণ। জগতের মায়া ত্যাগ করে অন্য কিছুর আহ্বানে প্রলুব্ধ হয়ে কবি তাই মৃত্যুবরণ করেছে চান না। তিনি অভিলাষ ব্যক্ত করেছেন, মানুষের মনজয়ী রচনা সৃজনের মাধ্যমে সবার কারে আদৃত হওয়ার। পৃথিবীর নরনারীর সুখ-দুঃখ-বিরহ যদি ঠিকভাবে তাঁর সৃষ্টিতে ঠাঁই পায়, তবেই তিনি অমর হবেন । তা-না হলে তাঁর রচনা শুকনো ফুলের মতোই সবার কাছে অনাদৃত হয়ে পড়বে। সং ও শুভকর্ম করে জগতে মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার জন্য দৃঢ় সংকল্প প্রয়োজন । কবিতাটিতে এ প্রত্যয়ই প্রতিফলিত হয়েছে । জীবন তো একবারই । জীবনে নেতিবাচকতা পরিহারপূর্বক মহামানবের পদচিহ্ন অনুসরণ করে জীবনপাঠের দীক্ষা কবিতাটিতে উচ্চকিত হয়েছে।


নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঃ


নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে

রয়েছ নয়নে নয়নে,

হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে

হৃদয়ে রয়েছ গোপনে।

বাসনা বসে মন অবিরত,

ধায় দশ দিশে পাগলের মতো।

স্থির আঁখি তুমি ক্ষরণে শতত

জাগিছ শয়নে স্বপনে।




সবাই ছেড়েছে নাই যার কেহ

তুমি আছ তার আছে তব কেহ

নিরাশ্রয় জন পথ যার যেও

সেও আছে তব ভবনে।

তুমি ছাড়া কেহ সাথি নাই আর

সমুখে অনন্ত জীবন বিস্তার,

কলি পারাপার করিতেছ পার

কেহ নাহি জানে কেমনে।

জানি শুধু তুমি আছ তাই আছি

তুমি প্রাণূমির তাই আমি বাঁচি,

যতো পাই তোমায় আরো ততো যাচি

যতো জানি ততো জানি নে।

জানি আমি তোমার পাৰো নিরন্তন

লোক লোকালুরে যুগ যুগান্তর

তুমি আর আমি মাঝে কেহ নাই

কোনো বাঁধা নাই ভূবনে।

নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে

রয়েছ নয়নে নয়নে।


কবি পরিচিতি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ২৫শে বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দে (৭ই মে ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। বাল্যকালে রবীন্দ্রনাথকে ওরিয়েন্টাল সেমিনারি, নর্মাল স্কুল, বেঙ্গল একাডেমি প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার জন্য পাঠানো হলেও তিনি বেশিদিন স্কুলের শাসনে থাকতে পারেননি। এমনকি সতেরো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথকে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য ইংল্যান্ডে পাঠানো হলেও দেড় বছর পরে পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখে তিনি দেশে ফিরে আসেন। বিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা তিনি লাভ করেননি, কিন্তু সাহিত্যের বিচিত্র ক্ষেত্রে তাঁর পদচারণা এক বিস্ময়ের বস্তু। তিনি ছিলেন প্রকৃত অর্থেই অসামান্য প্রতিভাধর। বাল্যেই তাঁর কবিপ্রতিভার উন্মেষ ঘটে। মাত্র পনেরো বছর বয়সে তাঁর বনফুল কাব্য প্রকাশিত হয়। ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলি কাব্যের জন্য এশীয়দের মধ্যে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বস্তুত তাঁর একক সাধনায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সকল শাখায় দ্রুত উন্নতি লাভ করে এবং বিশ্বদরবারে গৌরবের আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি একাধারে সাহিত্যিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, সুরকার, নাট্য প্রযোজক ও অভিনেতা। কাব্য, ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, গান ইত্যাদি সাহিত্যের সকল শাখাই তাঁর অবদানে সমৃদ্ধ । তাঁর অজস্র রচনার মধ্যে মানসী, সোনার তরী, চিত্রা, কল্পনা, ক্ষণিকা, বলাকা, পুনশ্চ, চোখের বালি, গোরা, ঘরে বাইরে, যোগাযোগ, শেষের কবিতা, বিসর্জন, ডাকঘর, রক্তকরবী, গল্পগুচ্ছ, বিচিত্র প্রবন্ধ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ২২শে শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দে (৭ই আগস্ট ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ) কলকাতায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে কবিতা

পড়িল হানিয়া জ্যোতিদাদাকে বসাইয়া আমাকে তিনি নূতন গান সব কটি একে একে হিতে বলিলেন। কোনো কোনো গান গাহিতে গান গাওয়া যখন শেষ হইল তখন তিনি বলিলেন, "দেশের রাজা দেশের ভাষা জানিত ও সাহিত্যের অদর বুঝি, তবে কবিকে তো তাহারা পুরুষ্কার দিত। রাজার দিক হইতে যখন তাহার কোনো সম্ভাবনা এই এখন আমাকেই সে-কাজ করিতে হইবে।" এই তিনি আমার হাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।


Also Read: চৈতী হাওয়া কবিতা – লেখক কাজী নজরুল ইসলাম | সাহিত্য মহল



পিতা আমাকে রেপ পড়াই পর্যায়ের অনেকগুলি বই পইচ গিয়াছিনে তাহারাই বেশি ফ্ল্যাকুলিনের জীবনবার তিনি আমার পাঠকুলে বাছিয়া ইলেন। তিনি মনে করিয়াছিলেন, জীবনী অনেকটা লাগিবে ইহা পতিতা আমার উপকার হইবে। কিন্তু পড়াইতে গিয়া আমার পিতাকে কে জাপড়াইতে পড়াইতে ফ্লাম্পলিনের সোধিত বিলতার দৃষ্টাে বিঃ" না করিয়া খাতিতে পারিবেন হর পূর্বে মৃধার পড়ার আর কোন আমাকে এতোবেই পড়াইতে লিন। কি এমন করিয়া পড়তে হইয়া। 

Post a Comment

0 Comments