বিরামচিহ্ন কী / বিরামচিহ্ন কাকে বলে? বাক্যে ছেদচিহ্ন বা বিরামচিহ্নের কাজ কী? বিরামচিহ্ন কত প্রকার ও কি কি? ( বিস্তারিত )



বিরামচিহ্ন কী / বিরামচিহ্ন কাকে বলে? বাক্যে ছেদচিহ্ন বা বিরামচিহ্নের কাজ কী?  বিরামচিহ্ন কত প্রকার ও কি কি?   ( বিস্তারিত )


বিরামচিহ্ন কী / বিরামচিহ্ন কাকে বলে?

একটি লিখিত বাক্যে ছেদ বা বিরাম বোঝানোর জন্য যেসব চিহ্ন ব্যবহার করা হয়, তাদের সাধারণত ছেদচিহ্ন বা বিরামচিহ্ন বলা হয়।

সঠিকভাবে বাক্যের অর্থ বোঝানোর জন্য বাক্যের মধ্যে এক একাধিক জায়গায় অল্প সময় কিংবা বেশি সময় থামার প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া বাক্যের শেষে তো অবশ্যই থামতে হয়। এই থামার সাধারণ নাম বিরাম।

আমরা যখন কথা বলি, তখন একটি বাক্যের সবটুকু অংশ এক নিঃশ্বাসে উচ্চারণ করতে পারি না। ফুসফুসে বায়ু সঞ্চায়ের বা ফুসফুসকে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য শ্বাসতন্ত্র মাঝে মাঝে থামে। 

তবে এই মাধ্যে রয়েছে একটি নিয়মের ধারাবাহিতা।  কেননা, না থেমে একনাগাড়ে বিরামহীনভাবে কথা বলে গেলে অর্থের বিপত্তি ঘটতে পারে। 

যেমন : 'তুমি ওখানে যেয়ো না গলেই গন্ডগোল হবে।'


বাক্যটিতে যে ভাব প্রাকাশিত হয়েছে তা মূলত সেখানে গেলেই গন্ডগোল হবে। কিন্তু বাক্যটিতে যদি প্রয়োজনীয় বিরামচিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাহলে অর্থটাই পাল্টে যায় : 'তুমি ওখানে যেয়ো, না গেলেই গন্ডগোল হবে।'

আবার বিরামচিহ্ন অন্যভাবে বিন্যস্ত করলে অর্থের ক্ষেত্রে বিশেষ পরিবর্তন ঘটে : 'তুমি ওখানে যেয়ো না, গেলেই গন্ডগোল হবে।'

যেকোনো ভাষায় লেখ্য রুপে বিরামচিহ্ন ব্যবহার অপরিহার্য। সুতরাং লেখার ক্ষেত্রে বক্তব্যকে যথাযথভাবে প্রকাশ এবং তার অর্থকে সুস্পষ্টভাবে উপস্থাপনের জন্য যেসব চিহ্ন ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে ছেদ বা বিরামচিহ্ন বলে।

বিরামচিহ্ন বক্তব্যকে বা লেখার ভাষাকে বোধগম্য, সুস্পষ্ট ও সুবিন্যস্ত করে।

বাক্যে ছেদচিহ্ন বা বিরামচিহ্নের কাজ কী ? 

  • বাক্যে ব্যবহৃত পদগুচ্ছকে ভাব অনুসারে অর্থবহ করা।
  • বাক্যাংশ সংগ্রথিত ও পৃথক করা।
  • বাক্যের সমাপ্তি নির্দেশ করা।

বিরামচিহ্ন কত প্রকার ও কি কি?

বিরামচিহ্ন কত প্রকার ও কি কি তা ক্রমানুসারে নিচে দেওয়া হলো :

বিরামচিহ্নের নাম - আকৃতি - বিরতিকাল 

  • কমা বা পাদচ্ছেদ - ( , ) - ১ (এক) বলতে যে সময় প্রয়োজন।
  • সেমিকোলন - ( ; ) - ১ বলার দ্বিগুণ সময়।
  • দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ - ( । ) - এক সেকেন্ড।
  • প্রশ্নবোধক চিহ্ন - ( ? ) - ঐ
  • বিস্ময় ও সম্বোধন চিহ্ন - ( ! ) - ঐ।
  • কোলন - ( : ) - ঐ।
  • ড্যাস - ( — ) - ঐ।
  • কোলন ড্যাস- ( :- ) - ঐ।
  • হাইফেন - ( - ) - থামার প্রয়োজন নেই।
  • ইলেক বা লোপ চিহ্ন - ( ’ ) - ঐ.
  • একক ও যুগল উদ্ধৃতি চিহ্ন - ( ' ' , “ ” ) - 'এক' উচ্চরণে যে সময় লাগে।
  • ব্র্যাকেট বা বন্ধনি চিহ্ন - ( ),{ },[ ] - থামার প্রয়োজন নেই।
  • ধাতু দ্যোতক চিহ্ন - ( √ ) - ঐ।
  • পরবর্তী রূপবোধক চিহ্ন- ( < ) - ঐ।
  • পূর্ববর্তী রূপবোধক চিহ্ন - ( > ) - ঐ।
  • সমান চিহ্ন - ( = ) - ঐ।
  • বর্জন চিহ্ন - ( ... ) - ঐ।
  • সংক্ষেপণ চিহ্ন - ( . ) - ঐ।


উৎস : ষষ্ঠ শ্রেণী, বাংলা ব্যাকরণ ।


আরও পড়ুন :  ভাষা কি/ভাষা কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি ? ( বিস্তারিত )

Post a Comment

0 Comments