অনলাইনে প্রতারণা এবং এর প্রতিকার
অনলাইন প্রতারণা
ইন্টারনেটের বদৌলতে মানুষ এখন অনলাইনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এবং এই সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। এখন মোবাইল ফোন দিয়ে এক ক্লিকেই খবর নেওয়া যায় পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের। যে কোনো তথ্য আদান-প্রদান করা যায় চোঁখের পলকেই। তাই বর্তমান যুগকে বলা হয় তথ্য প্রযুক্তির যুগ। শুধু তাই নয়, মানুষের চাহিদার কথা চিন্তা করে গড়ে ওঠেছে বিভিন্ন অনলাইন শপ। সেখান থেকে ঘরে বসে আপনার মোবাইল ফোন দিয়েই ক্রয় করতে পারবেন যেকোনো পণ্য।
ইন্টারনেটের এই বিপুল ব্যবহারের ফলে মানুষের দৈনন্দিন জীবন যেমন সহজ হয়ে ওঠেছে। সেই সাথে বিপাকে পড়ছে অনেকেই। অনলাইনে বিভিন্নভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছে বহু মানুষ।
অনলাইন শপগুলোতে যেভাবে প্রতারণা করা হয়:
তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে অনলাইন শপগুলোর জনপ্রিয়তা রয়েছে তুঙ্গে। মানুষ প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু ক্রয় করছে অনলাইন শপগুলো থেকে। আর এই সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছে কিছু সুযোগ সন্ধানী মানুষ। তারা ফেসবুক পেজ খুলে কিংবা ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন পণ্য সাধারন মানুষকে দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। টাকার বদলে ভোক্তার কাছে পৌঁছাচ্ছে না কোনো পণ্য কিংবা পণ্য পেলেও কাঙ্খিত পণ্যটি পাচ্ছে না। পরবর্তীতে যখন ভোক্তা পণ্য পরিবর্তন করার জন্য কিংবা পণ্য পাঠানোর জন্য কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে যায় কর্তৃপক্ষ তখন সেই ভোক্তার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আর এভাবেই অনলাইন শপগুলোতে প্রতারণার শিকার হচ্ছে অনেক মানুষ।
ফোন কলের মাধ্যমে প্রতারণা :
অনলাইন প্রতারণাগুলোর মাঝে ফোন কলের মাধ্যমেও প্রতারিত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। এই প্রতারণায় প্রতারক প্রথমত আপনাকে ফোন দিবে। তারপর খুব সুন্দরভাবে বলবে যে আমরা একটি কুইজ করেছিলাম সেখানে ৫ হাজার ফোন নম্বর যুক্ত করে লটারি করা হয়েছিল। তার মধ্যে আপনার নম্বরটি প্রথম বা দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় হয়েছে। এবং লটারির নিয়ম অনুযায়ী আপনি জিতেছেন ৫ লক্ষ টাকা। এ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক থাকবে। তারপর প্রতারক শুরু করবে নিজের কার্য সিদ্ধি করার প্রচেষ্টা। তখন বলবে যে টাকাটা আপনার হাতে পেতে হলে আমরা একটি নম্বর দিবো প্রথমে সেই নম্বরে ৫০ হাজার বা ১ লাখ টাকা পাঠাতে হবে তবেই লটারির টাকাটা আপনার কাছে পৌঁছে যাবে। অনেক লোকেই এই প্রতারণার শিকার হয়ে টাকা পাঠিয়ে পরে হা-হুতাশ করতে থাকে। এটি ছিল শুধু ফোন কল প্রতারণার একটি মাধ্যম। ফোন কলের মাধ্যমে প্রতারক বিভিন্ন কৌশল অনুসরণ করে প্রতারণা করে থাকে।
অনলাইন প্রতারণা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়:
অনলাইন প্রতারণা থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রথমে আপনাকেই সচেতন হতে হবে। কল দিয়ে কেউ লটারি জিতার কথা বলে বিনিময়ে প্রথমে আপনার কাছ থেকে টাকা চাইলে হুট করেই অপরিচিত কাউকে টাকা দিয়ে দিবেন না। আর অনলাইন শপগুলো থেকে কোনো কিছু ক্রয় করার পূর্বে শপটি কতটুকু বিশ্বস্ত সেই ব্যাপারে যাচাই করে নিবেন। মানুষ সেই শপ সম্পর্কে কেমন রিভিউ দিয়েছে সেসব পড়বেন। তাছাড়া সেই অনলাইন শপটির ট্রেড লাইসেন্সের কপি আছে কিনা দেখে নিবেন।
আপনি চাইলে আইনের আশ্রয়ও নিতে পারবেন।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর হবে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করা। প্রমাণাদির ভিত্তিতে আপনার অভিযোগ সত্যতা ফেলে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষকে জরিমানা প্রদান করার আদেশ দিবেন। এবং আদায়কৃত অর্থের ২৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তা পাবে।
তছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবগত করতে পারেন।
পরিশেষে, সচেতনতার বিকল্প নেই। লোভনীয় অফার দেখলেই না জেনে বুঝে তা ক্রয় করায় উৎসুক হওয়া যাবে না। বর্তমানে 'পণ্য হাতে পেয়ে মূল্য পরিশোধ' করা পদ্ধতিটি অনেক জনপ্রিয়।