লায়লী - মজনু। লায়লী মজনুর প্রেমের ইতিহাস। লাইলী মজনুর প্রেম কাহিনী বাংলা।



লায়লী - মজনু। লায়লী মজনুর প্রেমের ইতিহাস। লাইলী মজনুর প্রেম কাহিনী বাংলা।


মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের রচনা সমূহের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা হচ্ছে " লায়লী - মজনু " কাব্য। " লায়লী - মজনু " কাব্যের রচিয়তার নাম, ' দৌলত উজির বাহরাম খাঁ

কাব্যের নায়ক ' মজনু ' আরবের ধনকুবের আমিরের একমাত্র সন্তান। দীর্ঘকাল নিঃসন্তান থেকে অনেক প্রার্থনার পর আল্লাহর অশেষ দয়ায় তারা মজনুকে লাভ করেন। মজনুর প্রকৃত নাম ' কএস '। মজনুর জন্মের কিছুদিন পরেই লক্ষ করা গেল যে সে সুন্দরী নারীর কোল ভীষণ পছন্দ করে। একমাত্র সন্তানের জন্য তার বাবা সুন্দরী নারীর কোলের ব্যবস্থা করেন।

যথাসময়ে মজনুকে পাঠশালায় ভর্তি করানো হয়। এখানে এসেই লায়লীর সাথে মজনুর দেখা হয় এবং লায়লীর প্রেমে পড়ে যায় মজনু। লায়লীও মজনুর প্রেমে পড়ে যায় । তারা পাঠশালার পাঠের চেয়ে প্রেম পাঠে বেশি মনোযোগ দেয়। একে অপরকে প্রতিজ্ঞা করে যে, কেউ কাউকে ছেড়ে  যাবে না। একজনে আরেক জনকে না দেখলে এক মুহূর্ত থাকতে পারে না।

লায়লীর প্রেমের কথা তার সহপাঠীদের মাধ্যমে লায়লীর মা জানতে পারে এবং লায়লীকে গৃহবন্দী করে রাখে।

মজনু ছদ্দবেশ ধারণ করে লায়লীর সাথে দেখা করতে গেলে ধরা পরে বেদম মার খায়। লায়লীর বিরহে মজনু উন্মাদ হয়ে পরে। সংসার জীবন ত্যাগ করে নজদ বনে বনবাসে চলে যায় মজনু। খেয়ে না খেয়ে হিংস্র জানোয়ারদের সাথে থাকে এবং  লায়লীর নাম জপে আর কাঁদে।

নয়ফল রাজা নজদ বনে শিকারে গেলে সেখানে মজনুর সাথে সাক্ষাত হয়। মজনুর কাছ থেকে সব শুনে এবং ' লায়লী - মজনুর ' প্রেমের মিলন ঘটাতে যুদ্ধ করে লায়লীর বাবাকে পরাজিত করে।

আরও পড়ুন 👉 " লায়লী - মজনু " কাব্য নিয়ে প্রয়োজনীয় জ্ঞান মূলক প্রশ্ন :

লায়লীকে দেখে নয়ফল রাজারও ভীষণ পছন্দ হয়ে যায়। মজনুর কাছে লায়লী সম্পর্কে নিন্দা করে। কিন্তু মজনু নয়ফল রাজাকে বলেন, ' যদি আমার চোখ দিয়ে আপনি লায়লীকে দেখতেন শুধু তবেই বুঝতেন লায়লী আমার চোখে কী!

নয়ফল রাজা তখন মজনুকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন।
এক পাত্রে বিষ এবং অন্য পাত্রে মধু দিয়ে সেবক'কে বলেন মজনুকে যাতে বিষ ওয়ালা পাত্রটি দেওয়া হয়। কিন্তু সেবক ভুল করে বিষ ওয়ালা পাত্রটি নয়ফল রাজাকে দেয় এবং বিষ পানে নয়ফল রাজার মৃত্যু হয়।

লায়লীর অমতে ' ইবনে সালাম ' নামক এক যুবকের সাথে তার বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মজনু ছাড়া লায়লী আর কাউকেই স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারে না। তাই বাসর রাতেই  লায়লী তার স্বামীকে পদাঘাত করেন এবং বলেন, ' বামন হইয়া চাহ ছুঁইতে আকাশ '।

পরে লায়লী তার বাবা-মায়ের সাথে শ্যামদেশে যাত্রা কালে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে নজদ বনে গিয়ে মজনুর সাথে দেখা করে। এবং লায়লী মজনুকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মজনু লোক - লজ্জা'র ভয়ে ও সামাজিক রীতিনীতির কথা ভেবে লায়লীকে ফিরিয়ে দেয়।

কবির ভাষায় লায়লীর প্রস্তাবের উত্তরে মজনু যা বলেছিল:

গুপ্ত রূপে তোক্ষাকে করিলে পরিণয়।
আরব নগরে লোকে দুষিবে নিশ্চয়।।

কাব্যের পরিণতিতে লায়লীর মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে মজনু কবরস্থানে গিয়ে ঘ্রাণ শুকে শুকে লায়লীর কবর বের করে এবং লায়লীর কবরের পাশেই মজনুরও মৃত্যু হয়।

এভাবেই লায়লী - মজনু কাব্যের সমাপ্তি হয়।

Post a Comment

3 Comments
  1. অনেক ভালো লাগলো

    ReplyDelete
  2. I love you for all that you are, all that you have been and all that you will be.
    ---- Mushfiq Borat

    ReplyDelete
  3. মাশাআল্লাহ

    ReplyDelete