উপসংস্কৃতি কি/ উপসংস্কৃতি কাকে বলে? উপসংস্কৃতির শ্রেণীবিভাগ কত প্রকার ও কি কি? উদাহরণ সহ
উপসংস্কৃতি কি/ উপসংস্কৃতি কাকে বলে?
সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। কিন্তু সমাজ, জাতি বা দেশভেদে এই সংস্কৃতির ধরন ও বৈশিষ্টে স্বাতন্ত্র পরিলক্ষিত হয়। আর সংস্কৃতির এই পরিবর্তন ও পার্থ্যকই হলো উপসংস্কৃতি।
উপসংস্কৃতির শ্রেণীবিভাগ:
- উপজাতি উপসংস্কৃতি।
- ভাষাগত সংস্কৃতি।
- ধর্মীয় সংস্কৃতি।
- ধনী সংস্কৃতি।
- দরিদ্র সংস্কৃতি।
- অপরাধ সংস্কৃতি।
- হিজড়া সংস্কৃতি।
- পরিবেশগত সংস্কৃতি।
- পেশাগত সংস্কৃতি।
- বর্ণ সংস্কৃতি।
- বেদে সংস্কৃতি।
উপজাতি উপসংস্কৃতি: উপজাতি সংস্কৃতি হচ্ছে বাংলাদেশের উপসংস্কৃতিগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশে বিভিন্ন উপজাতির বসবাস রয়েছে। যেমন: সাঁওতাল, মণিপুরী, মারমা, গারো, চাকমা ইত্যাদি। এদের নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। তবে উপজাতিভেদে সংস্কৃতির পার্থক্য বিদ্যমান।
ভাষাগত সংস্কৃতি: বাংলা হচ্ছে বাংলাদেশের মাতৃভাষা। তাছাড়াও বাংলাদেশে আরও বিভিন্ন ভাষার লোক বাস করে এবং তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। ভাষাগত পার্থক্যের কারণে তাদের আচার-আচারণেও পার্থক্য দেখা যায়। এগুলো হচ্ছে বাংলা ভাষার সংস্কৃতির মধ্যে উপসংস্কৃতি।
ধর্মীয় সংস্কৃতি: সমাজে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করে। যেমন: মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি এবং এদের রয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব। যেমন: মুসলমানদের রয়েছে রোযা, ঈদ; হিন্দুদের পূজা; বৌদ্ধদের বৌদ্ধ পূর্ণিমা; খ্রিস্টানদের বড়দিন ইত্যাদি। এদের সবারই নিজস্ব সংস্কৃতি আছে এবং এদের চাল-চলন একজন থেকে আরেকজনের আলাদা। তাদের মধ্যে সংস্কৃতিগত পার্থক্য দেখা যায়।
ধনী সংস্কৃতি: সমাজে যারা অনেক ধন-সম্পদের মালিক তাদের ধনী বলা হয় এবং এদের সংস্কৃতিও আলাদা হয়। এদের এবং এদের ছেলেমেয়েদের আচার-আচারণ, পোশাক-পরিচ্ছেদ, চলাফেরা আলাদা ও উন্নতমানের হয়।
দরিদ্র সংস্কৃতি: সমাজে যাদের ধন-সম্পদ কম তাদের গরীব বা দরিদ্র বলা হয়ে থাকে। এদের চলাফেরা, যাতায়াত, পোশাক-আশাক ভিন্ন হয়।
অপরাধ সংস্কৃতি: যারা অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে সমাজে তাদের অপরাধী বলে। তারা সমাজে চুরি-ডাকাতি, ধর্ষণ, ছিনতাই সহ বিভিন্ন জঘন্য অপরাধ করে। এই অপরাধীরাও কিন্তু আলাদা কোনো ব্যাক্তি নয়। তারাও সমাজেরই অংশ এবং তাদেরও রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি।
হিজড়া সংস্কৃতি: হিজড়াদেরও রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি এবং তাদের সম্প্রদায়ও আমাদের সংস্কৃতিরই অংশ। অনেক ক্ষেত্রে তারা একত্রে বসবাস করে এবং রাস্তা-ঘাট ও হাট-বাজারে গান কিংবা অন্যান্য প্রদর্শনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে থাকে।
পরিবেশগত সংস্কৃতি: পাশ্চাত্যে সবাইকে আঙ্কেল বলে ডাকা হলেও বাংলাদেশে পরিবেশগত সংস্কৃতির পার্থক্য দেখা যায়। এখানে বাবার ভাইকে চাচা এবং মায়ের ভাইকে মামা বলে ডাকা হয়।
পেশাগত সংস্কৃতি: সমাজে পেশাভেদেও সংস্কৃতি রয়েছে। এদের সংস্কৃতি পেশাভেদে একে অপরের থেকে আলাদা হয়। আবার অপেশাগত লোকদের সংস্কৃতি এদের থেকে আলাদা হয়।
বর্ণ সংস্কৃতি: বর্ণ ভেদেও রয়েছে সংস্কৃতি। বাংলাদেশে অনেক বর্ণের মানুষ বসবাস করে কেউ ফর্সা, কেউ শ্যামলা, আবার কেউ কালো। এদের সবার মাঝেই সংস্কৃতিগত পার্থক্য রয়েছে।
বেদে সংস্কৃতি: যারা এক যায়গা থেকে অন্য যায়গায় ঘুরে বেড়ায় এবং যাযাবর জীপনযাপন পালন করে তাদের বেদে বলা হয়। এরা বর্ষার সময় নৌকায় করে এক যায়গা থেকে আরেক যায়গায় ঘুরে বেড়ায়। এদেরও নিজস্ব সংস্কৃতি
পরিশেষে বলা যায়, সংস্কৃতির একটি উপবিভাগ হচ্ছে উপসংস্কৃতি এবং এই সংস্কৃতির মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করি। আর এই উপসংস্কৃতির জন্যেই মানুষের জীবনধারণ ভিন্ন হয়।
nice
ReplyDelete